পটুয়াখালীর গলাচিপার উপকূলীয় এলাকা চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের একাংশ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন চতুর্পাশে নদী দ্বারা বেষ্টনী ও নয়নাভীরাম সবুজ বনভূমিতে ঘেরা প্রায় সাড়ে পাঁচ শত একর ভূমি অধ্যুষিত এলাকার নামই হল চর বাংলা।এখানে প্রায় তিন হাজার লোকের বসবাস। শিশুদের লেখাপড়ার জন্য শুধু মাত্র ৩ জন শিক্ষক মন্ডলীর মাধ্যমে দোতলা ভবনে পরিচালিত একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয় পাঠ শেষ করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য তেঁতুলিয়া নদী পাড় হয়ে আসতে হয় চরবিশ্বাস ও চরকাজলে। প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্যা বা আমাবস্যা-পূর্নিমার জোয়ারের সময় অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হয়ে তলিয়ে যায় বসবাসরত সমস্ত ঘরবাড়ি।
প্রতি মূহুর্তে গুনতে হয় মৃত্যুর প্রহর। অতিরিক্ত পানি থেকে রক্ষার জন্য নেই কোন ভেড়ি বাঁধ। বড় ধরনের ঘূর্ণিঝড় ও সাইক্লোন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শুধু মাত্র তাদের ভরষা স্থল হল পুরনো ফাটল ধরা মেরামত করা একতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি।সেখানে বন্যার সময় এতলোক আশ্রয় নেয়ার মত নেই কোন জায়গা। এখানে সর্বোচ্চ আশ্রয় নিতে পারে দুই থেকে তিনশত মানুষ। সরকারিভাবে গরীবদের বসবাসের জন্য তৈরি আশ্রয়ণ কেন্দ্র ছাড়া সমস্ত ঘরবাড়ি গুলো নিচে মাটির তৈরি ভিটে উপরে টিনশেট ঘর।পাশের বনভূমি থেকে আসা রাতে ঘুমানোর সময় শিয়ালের ভয়ে শিশুদের রাখতে হয় নিরাপত্তার স্বার্থে খাঁচার ভিতরে তার কারণ শিয়াল মাটি খুড়িয়ে শিশুদের ঘুমন্ত অবস্থায় ধরে নিয়ে গিয়ে খেয়ে ফেলে। অনেক সময় বয়স্ক ব্যক্তিদেরও আক্রমণ করে থাকে।এ ছাড়া আরও আছে বৃহৎ প্রকৃতির অজগর সহ বিশাক্ত সাপের আস্তানা। এলাকার মানুষজন জীবিকা নির্বাহ করে থাকে কৃষি ও মৎস আহরোন-বিক্রয় করে।
এ বিষয়ে চর বাংলা মসজিদের ঈমাম মো. আ. রব, মো. সোহরাব আকন ও রফিক সরদার জানান, এই এলাকায় ভেড়ি বাঁধ না থাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় গোটা এলাকার ঘরবাড়ি তাই আমাদের চারপাশ দিয়ে ভেড়ি বাঁধ অতি দ্রুত দরকার।
বন্যার সময় আশ্রয় নেয়ার জন্য নেই কোন বড় ভবন। বাচ্চাদের লেখাপড়ার জন্য শুধু মাত্র একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া নেই কোন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়।এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তিনি যেন মানবিকভাবে অতি দ্রুত আমাদের সমস্ত সমস্যার সমাধান করে দেন।
উক্ত বিষয়ে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মো. বাবুল মুন্সী জানান, চর বাংলার মানুষজন ও ঘরবাড়ি রক্ষার জন্য ভেড়ি বাঁধ এবং ঘূর্ণিঝড় আশ্রায়ণ কেন্দ্রের জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি, হয়ত পাশ হয়ে আসলে সমস্যার সমাধান করা হবে।